১২ অক্টোবর ২০২৫ , ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব ফের সেবাস্তিয়ান লেকোর্নুকেই দিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

ইউরোবার্তা ডেস্ক
আপলোড সময় : ১১-১০-২০২৫
প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব ফের সেবাস্তিয়ান লেকোর্নুকেই দিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ
নাটকীয়তা সৃষ্টি করে আবারও পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রীকেই ফিরিয়ে আনা হলো তার দ্বায়িত্ব। সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু  পদত্যাগ করে গোটা ফ্রান্স জুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন।  কিন্তু তেমন কোনো মন্তব্যই করেনি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। পরে জানিয়েছিলেন সহসাই প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। কিন্তু দিয়েছেন ঠিকেই, কিন্তু সেই পুরানোজনকেই। 

এর আগে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৬ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু। কেননা সেবার মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই তীব্র সমালোচনার মুখে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) পদত্যাগপত্র করেছিলে লেকোর্নু। 

এদিকে  শুক্রবার ফরাসি প্রেসিডেন্টর ভবন ‘এলিসি প্যালেস’ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সেবাস্তিয়ানকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের পাশাপাশি তাকে সরকার গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। 



প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি কর্তব্যের বাইরে গিয়ে হলেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফ্রান্সকে একটি বাজেট প্রদান এবং আমাদের নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করার জন্য প্রেসিডেন্টের অর্পিত মিশনটি গ্রহণ করছি। আমাদের অবশ্যই এই রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটাতে হবে, যা ফরাসি জনগণকে বিরক্ত করে এবং ফ্রান্সের ভাবমূর্তি ও এর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর।’

এছাড়াও শনিবার প্যারিসের দক্ষিণে অবস্থিত শহরতলির ল'হে-লেস-রোজেসের একটি পুলিশ স্টেশন পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লেকর্নু বলেন, ‘ফ্রান্সের এমন একটি সরকার প্রয়োজন যা সংসদের বাস্তবতা প্রতিফলিত করে কিন্তু দলীয় স্বার্থের কাছে জিম্মি নয়।’ 

এদিকে দেশটির অতি ডানপন্থী দল ‘ন্যাশনাল র‍্যালি’ হঁশিয়ারি দিয়েছে, ‘সরকারের পতনে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আবারো অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে কারণ এই সরকারের কোনও ভবিষ্যৎ নেই।’ 


প্রসঙ্গত, সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। নিয়োগের প্রায় এক মাস পর রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করেন লেকোর্নু। সোমবার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই সেই তালিকা ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। মন্ত্রিসভায় তেমন কোনো পরিবর্তন না থাকায় বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন জোটের অনেক সদস্যও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

জাতীয় পরিষদের একাধিক দল অভিযোগ তোলে, নতুন মন্ত্রিসভায় আগের সরকারের ব্যর্থ সদস্যদেরই পুনরায় রাখা হয়েছে। তারা এই মন্ত্রিসভা বাতিলের দাবিতে ভোটের হুমকিও দেয়। এমনকি কেউ কেউ আগাম নির্বাচন চায়, কেউ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগও দাবি করে।

সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রী লেকোর্নু পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করেন। এর ফলে ফ্রান্সে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হয়। গত বছরের জুলাই থেকে দেশটির সংসদে সরকার কোনো দলীয় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় একের পর এক রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ফলে বাজেট পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়ছে।

সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু ম্যাক্রোঁর দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। তার সংক্ষিপ্ত সময়ের মেয়াদে মন্ত্রিসভা গঠনই হয়ে উঠলো প্রধান রাজনৈতিক বিতর্ক। এখন দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, আর কিভাবে এই রাজনৈতিক সংকট থেকে ফ্রান্স মুক্তি পাবে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা


কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ